পেপটিক আলসার নিরাময়ে যা করবেন।।।।। জেনে নিন।।।
সহজ কথায় পেপটিক আলসার হল পাখস্থলীর ঘা বা ক্ষত।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে পেপটিক আলসার, “হেলিকোব্যাক্টরপাইলোরি”নামক ব্যক্টেরিয়া দ্বারা সংক্রমণের কারণে ঘটে থাকে।এছাড়া,নন স্টেরয়েড এন্টি ইনফ্লামেটরি ড্রাগ গ্রহণের ফলে ও পেপটিক আলসার হতে পারে।
পাশাপাশি,ধূমপান,স্টোমাক ক্যান্সার,অতিরিক্ত মদ্যপান,অতিরিক্ত তেল মসলা যুক্ত খাবার,খাদ্য গ্রহণে অনিয়ম,মানসিক হতাশা,জেনেটিক্স প্রভৃতি কারণে পেপটিক আলসার হতে পারে।
পেপটিক আলসার লক্ষণ গুলোর মধ্যে রয়ছে,বুক জ্বালা পোড়া করা,ক্ষুধা ও ওজন কমে যাওয়া,বমি বমি ভাব হওয়া বা বমি হওয়া,মেরুদন্ড বা বুকের পেছনে ব্যাথা।সুতরাং,এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবুং নীচের নিয়ম গুলো মেনে চলুন।
যারা পেপটিক আলসারে আক্রান্ত তাদের প্রথম কাজ হল,প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা।সারাদিনের খাবারকে তিন বারের পরিবর্তে ৫-৬ বারে গ্রহন করা।
সবচেয়ে,গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা এবং অন্তত ২-৩ ঘন্টা পর পর অল্প কিছু হলেও খাওয়া।
খাওয়ার পর অন্তত ৩ ঘন্টা আগে ঘুমাতে না যাওয়া,এবং অতিরিক্ত রাত না জাগা।
খাবার খাওয়ার সময় খুব ভাল ভাবে চিবিয়ে খাওয়া।প্রতিবার খাওয়ার পর কিছু সময় রিলাক্স করা।
রেড মিটের পরিবর্তে দেশি মুরগী,টার্কি মুরগী এবং ফ্যাটি ফিস যেমনঃ সার্ডিন,ম্যাকারেল,রুই মাছ খেতে পারেন।
ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার আলসারের ক্ষত সারাতে এবং আলসার প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে।
পেপটিক আলসারে সুস্থ থাকতে নিয়মিত ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার যেমনঃ মিষ্টিআলু,গাজর, কুমড়া, পালংশাক, পেপে,আম,রেড বেল পিপার গ্রহণ করুন।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার স্টমাকের এসিড কমাতে সাহায্য করে।বিশেষ করে দ্রবনীয় আঁশ যেমনঃ ওটস,বার্লি, আপেল,ডুমুর,নাশপাতি,মিষ্টি আলু,বীন্স।এছাড়া,নিয়মিত ব্রকলি,বাঁধাকপি,গাজর প্রভৃতি সবজি খেতে ভুলবেন না।টক দই এবং যেকোন ফার্মেন্টেড মিল্ক,কোরিয়ান খাবার মিসো,খিমচি প্রভৃতি খাবার গুলো ভাল ব্যক্টেরিয়া বা প্রোবায়োটিকের উৎকৃষ্ট উৎস।আর প্রোবায়োটিক “এইচ পাইলোরির” গ্রোথকে ইনহিবিট করে ফলে আলসারের ক্ষত দ্রুত ভালো হয়।
নিয়মিত ফ্লাভোনয়েড সমৃদ্ধ খাবার যেমনঃ গ্রীন টি, আদা,রসুন,পেয়াজ এবং রঙিন শাকসবজি এবং ফল খেলে দ্রুত আলসারের ক্ষত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
পেপটিক আলসারের ক্ষত দ্রুত সারাতে প্রতিদিন ১ চা চামচ করে অপ্রক্রিয়াজাত মধু খেতে পারেন।
নিয়মিত সঠিক পরিমানে পানি পান এবং ব্যায়াম করা।
কাঁচা সবজি এবং সালাদ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
চকোলেট,কফি,ভাঁজা পোড়া খাবার,কাঁচা সবজীর সালাদ,তৈলাক্ত এবং মসলা যুক্ত খাবার, কার্বোনেটেড বেভারেজ এবং মিষ্টি,লবণাক্ত খাবার এবং রেড মিট একেবারে পরিহার করা উচিত।
হাই ফ্যাট দুধ এবং দুধের তৈরি খাবার পরিহার করা।আগে,আলসারের চিকিৎসায় দুধ উপকারী বলে ধারণা করা হত।তবে,বর্তমানে প্রমানিত হয়েছে যে,দুধ খেলে অতিরিক্ত এসিড ক্ষরণ হয় যা আলসারের সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে দেয়।তবে,লো-ফ্যাট চীজ,দই হলে সমস্যা নেয়।।
রান্নায় গুড়া মরিচ এবং অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।