❑❑
গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা অতীতে দুই দফায় জাতিসংঘে তাঁর দেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। খুব স্বাভাবিকভাবে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি সম্পর্কে তিনি আগে থেকেই জানতেন। ফলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনিও রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় তাঁর দেশের ভূমিকা রাখার বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা ঢলের পর থেকেই এ সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ আর আলোচনায় থেকেছে গাম্বিয়া। তৃতীয় দেশে প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে নেওয়ার বিষয়টিও যে গাম্বিয়া ভাবছে তা বাংলাদেশকে জানিয়েছে দেশটি। রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই গাম্বিয়া নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছে। ২০১৮ সালের প্রথম দিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে আলোচনার একপর্যায়ে গাম্বিয়া স্পষ্ট করেই বাংলাদেশকে বলেছিল, দ্বিপক্ষীয়ভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবে না।
ওআইসির ভূমিকাঃ ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা ঢলের পর থেকেই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপের কথা ভাবতে শুরু করে ওআইসি। এ জন্য ইসলামি দেশগুলোর বৃহত্তম জোটটি আসিয়ানভুক্ত মুসলিম দেশ মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রুনেইকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। কিন্তু এসব দেশ সেভাবে এগিয়ে আসেনি। অথচ রোহিঙ্গা ঢলের পরপরই মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার নিয়ে উচ্চকণ্ঠে রয়েছে গাম্বিয়া। তাই ওআইসি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইনি পদক্ষেপ নিতে গাম্বিয়াকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশে ২০১৮ সালের ৩০ ও ৩১ মে ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন শেষে গৃহীত ঢাকা ঘোষণার ৪৭ নম্বর অনুচ্ছেদে ওআইসির পক্ষে গাম্বিয়াকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
গত বছরের শুরু থেকেই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে গাম্বিয়া বিষয়টি ওআইসির বিভিন্ন ফোরামে তোলে। এরপর ওআইসি গাম্বিয়াকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করার দায়িত্ব দেওয়ার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেয়।