ঢ্যাঁড়শের নানা পুষ্টি গুন ।।।।।।।।।।।
ঢ্যাঁড়শ আমাদের অতি পরিচিত একটি সবজি।খেতে ভীষণ সুস্বাদু।তবে পিচ্ছিল সবজি হওয়াতে অনেকেই এই সবজিটি খেতে পছন্দ করেন না।আপনি খেতে পছন্দ করেন আর নাই করেন, ঢ্যাঁড়শ কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী।না খেলেই বরং নিজেরই ক্ষতি।
হালকা বা গাড় সবুজ রঙের এই সবজিটিতে খুব ভাল পরিমাণে ভিটামিন-এ, ফ্লাভোনয়েড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমনঃবেটা ক্যারোটিন,জ্যান্থিন এবং লিউটিন রয়েছে।অন্যান্য সবজির তুলনায় ঢ্যাঁড়শে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর পরিমাণ তুলনামূলক বেশি।
ঢ্যাঁড়শে থাকা ভিটামিন-এ আমাদের ত্বক এবং হেলদি মিউকোসার জন্য গুরুতপূর্ণ।অর্থাৎ ত্বক এবং মুখের আর্দ্রতা বজায় রাখতে ভিটামিন-এ সাহায্য করে।
ঢ্যাঁড়শে ভাল পরিমাণে ফ্লাভোনয়েড রয়েছে।বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিয়মিত প্রাকৃতিক ফ্লাভোনয়েড যুক্ত সবজি এবং ফলমূল গ্রহণ করলে লান এবং ওরাল ক্যাভিটি ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।
বর্তমানে অনেকেই উচ্চ রক্তচাপ,উচ্চ কোলেস্টেরল,পাইলস বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাতে ভুগে থাকেন।তার একটি প্রধান কারণ হল,প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ না করা।
মাত্র ৮টি মিডিয়াম সাইজের ঢ্যাঁড়শ থেকে আমরা প্রায় ৩ গ্রাম মত ফাইবার বা আঁশ পেয়ে থাকি যা আমাদের দৈনিক ২৫-৩০ গ্রাম ফাইবারের চাহিদা পূরণ করতে অনেক খানি সাহায্য করে।
গর্ভকালীন সময়ে ফোলেটের চাহিদা এবং গুরুত্ব দুটোই বেড়ে যায়।ঢ্যাঁড়শে বেশ ভাল পরিমাণে ফোলেট রয়েছে যা গর্ভস্থ শিশুর নিউরাল টিউব ডিফেক্টস দূর করতে সাহায্য করে।এছাড়া,ঢ্যাঁড়শে বেশ ভাল পরিমাণে ফাইবার রয়েছ যা গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে।
ঢ্যাঁড়শে খুব ভাল পরিমাণে ভিটামিন-কে রয়েছে যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এমন এনজাইমের কো-ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করে।ফলে আমাদের কোথাও কেটে গেলে খুব দ্রুত রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
ঢ্যাঁড়শে থাকা ফোলিক এসিড লোহিত রক্ত কনিকা তৈরি করতে সাহায্য করে। সুতরাং,নিয়মিত ঢ্যাঁড়শ খেলে এনিমিয়া দূর হয়।
ঢ্যাঁড়শ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী।ঢ্যাঁড়শে থাকা ফাইবার ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।
সাবধানতাঃ
যাদের দেহে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি ইউরিক এসিড আছে তারা অন্যান্য পিচ্ছিল সবজি যেমনঃকচুর মুখী,লতি,পুঁইশাক এর মত ঢ্যাঁড়শ ও খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দেবেন।
যেহেতু আজকাল প্রায় সব ধরণের সবজিতে বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক স্প্রে করা হয়।তাই রান্নার পূর্বে অন্তত ৩০ মিনিট একটি বড় বাটিতে ঢ্যাঁড়শ গুলো ভিজিয়ে রাখুন।এরপর ৩ থেকে ৪ মিনিটি রানিং ওয়াটারে ধুয়ে নিন।
রান্নার টিপ্সঃ
ঢ্যাঁড়শ রান্নার শুরুতে একটু টক কিছু দিয়ে রান্না করুন যেমনঃএক থেকে দুই চা চামচ লেবুর রস,
তেতুলের টক বা ড্রাই আমের পাউডার, তাহলে ঢ্যাঁড়শের পিচ্ছিল ভাব চলে যাবে।
আর একটি কথা, ঢ্যাঁড়শ রান্নার সময় লবণ শুরুতে না দিয়ে,রান্নার শেষ দিকে দেবেন রান্নায় সুবিধা হবে।