অপেক্ষা আর কিছু দিনের, তারপরেই সন্ধ্যায় বাইরে যাবার আগে পাতলা শালটা গায়ে চড়ানো হবে। ভোরবেলায় হিম নামলে ভারী চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে আরো গাঢ় হয়ে আসবে ঘুমটা। সকালবেলা ঠোঁট তখন বেশিই শুকনো লাগতে থাকবে। রাতে শোবার আগে নজরে আসবে, অনেকটাই খসখসে লাগছে হাত-পা। তাই টুকিটাকি যত্নআত্তি শুরু করুন নিজের, এবং তা শীতকাল আসার আগেই। শীতের রুক্ষতা ত্বকে ছাপ ফেলে যাবে আর তারপর যত্ন করবেন, বড্ড ঝামেলা হয়ে যায় তখন। যেকোনো সমস্যাই প্রতিকার করার চেয়ে প্রতিরোধ করার কথা ভাবা উচিৎ আগে। তবে শীত মোকাবিলায় তা নয় কেন? চলুন তাহলে জেনে নেই শীতে ত্বকের যত্ন নেওয়ার কিছু পদ্ধতি সম্পর্কে।
১) ময়েশ্চারাইজারকে ভুলবেন নাঃ
ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা, ত্বকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগানো আর খাদ্যাভ্যাস সঠিক রাখা, প্রাণবন্ত ত্বক পাওয়ার এগুলোই মূলকথা। বিশেষ করে রুক্ষতা যখন প্রকৃতিই দিচ্ছে, ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা তখন আরও বেশি জরুরি হয়ে পড়ে। আর তাই আপনার ত্বক তেলতেলে খুব, ঘাম হবে, বা স্রেফ বিরক্ত লাগছে এসব বাহানায় ময়েশ্চারাইজারকে ভুলে থাকবেন না। খুব পাতলা ময়েশ্চারাইজার হলেও তা নিয়মিত ত্বকে ব্যবহার করা উচিৎ। লক্ষ্য রাখবেন শীতে ত্বকের যত্ন নিতে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজারকে সঙ্গী করে নিবেন।
২) ত্বকের যত্নে তেলঃ
ত্বকে তেলের যে প্রয়োজনীয়তা তা অন্যকিছু পূরণ করতে পারে না। তাই যতই অস্বস্তি হোক, ত্বকের যত্নে তেলের উপস্থিতি রাখুন। গোসলের আগে হলেও শরীরে জলপাই কিংবা বাদাম তেল মাখুন। গোসল করে নিলে বাড়তি তেলটা ত্বকের উপরিভাগ থেকে ধুয়ে যাবে। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এই জিনিস ভীষণ উপকারী। অসুবিধা না থাকলে তেল ব্যবহার করা চলবে গোসলের পরেও, তাতে তেল ত্বকে দীর্ঘ সময় থাকবে এবং রুক্ষতার বারোটা বাজাবে সে। হাত-পা নিষ্প্রাণ লাগতে শুরু করার আগেই আপনি বরং হাত-পায়ের যত্ন নেয়া শুরু করুন। কেননা পায়ের চামড়ায় একবার রুক্ষতা গেড়ে বসলে তা বিদায় করা ভীষণ আপদ। বেশি ঝক্কি নেই এই কাজে, হাতে খানিক নারকেল তেল ঢেলে নিয়ে তাতে সামান্য চিনি মেশান। এবার সেটা হাত ও পায়ে মালিশ করে নিন পাঁচ মিনিট সময় নিয়ে। তারপর একটি গামলায় কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে হাত-পা ডুবিয়ে তেল পরিষ্কার করুন। ত্বকের কমনীয়তা টের পাবেন প্রথম ব্যবহারেই।
৩) ভ্যাসলিন আর লিপবাম হাতের কাছে থাকুকঃ
ত্বকের শুষ্কতা আর কয়েকদিন পরই টের পাইয়ে দিবে শীতের আগমন ঘটছে। বিশেষ করে ঠোঁট বারবার শুকিয়ে গিয়ে বিব্রত করতে থাকবে যখন তখন। ভ্যাসলিনের কৌটা সবসময় সামনে রাখা চাই, আর সাথে লিপবামটা রাখা চাই বাইরে বের হলেও। শীতের সময়টায় অন্তত কেবল লিপস্টিকে ঠোঁটের দরকার মেটে না। গালের চামড়াও মাঝেমাঝে খসখসে লাগতে পারে, ছোট বাচ্চাদের যেমন হয় প্রায়শই। তেমন হলে রাতে শোবার আগে গালে হালকা ভ্যাসলিন লাগিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুম দিন। সকালে উঠে অনেকটাই মসৃণ অনুভব করবেন ত্বক। শীতে ত্বকের যত্ন নিতে অবশ্যই হাতের কাছে ভ্যাসলিন এবং লিপবাম রাখবেন।
৪) শীতের বন্ধু গ্লিসারিনঃ
গ্লিসারিনের ছোট বোতলটা ছাড়া শীতকাল পার হবে, খুব সুখকর নাও হতে পারে ব্যাপারটা। এখন থেকেই ফেইসপ্যাকে দুই/তিন ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে নেয়ার অভ্যাস করুন। পানি কিংবা গোলাপজলে মিশিয়ে পুরো শরীরেই মাঝেমাঝে গ্লিসারিন লাগানো ত্বকের জন্য খুব বেশি ভালো।
এইসব অভ্যাস শুরু হোক এখন থেকেই। শীতের আমেজ যেন ত্বকের শত্রু না হয়ে যায় পরে। আপনার ত্বক শীত মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকুক আগেভাগেই।