বাংলা : গ্রন্থ সমালোচনা সাজেসন্স ও গঠন কাঠামো
-------------------------------------------------
আমার মতে সিলেবাসে গ্রন্থসমালোচনা নামক অংশটা অন্তর্ভুক্ত করার মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভাষা আন্দোলন /মুক্তিযুদ্ধ তথা বঙ্গবন্ধু ভালো কে জানা । এ সম্পর্কিত
বহুল আলোচিত বইগুলো পড়লেই হবে। তাছাড়া এক্ষেত্রে একটি কমন প্ল্যাটফরম রাখবে অর্থাত্ আমরা ছোট বেলা থেকেই যেসব গল্প /উপন্যাস পড়েছি সেগুলো থেকেই থাকবে , তাই এগুলো বেশি গুরুত্বদিন। অথবা থাকতে পারে এই বই মেলায় প্রকাশিত তোমার পড়া/ বিখ্যাত লেখকের একটি . গ্রন্থের সমালোচনা করতে বলতে পারে।
নিচের গুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ
১। অসমাপ্ত আত্মজীবনী
২। শেখ মুজিব আমার পিতা
২। হাজার বছর ধরে
৩। লালসালু
৪। পদ্মা নদীর মাঝি
৫। তিতাস একটি নদীর নাম
৬। পথের পাঁচালী
৭। আব্দুল্লাহ
৮। রক্তাক্ত প্রান্তর
১০। কবর
৯। বিষাদ সিন্ধু
১০।পুতুল নাচের ইতিকথা
১১। পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়
১২। আরেক ফাল্গুন,
১৩। নিষিদ্ধ লোবান,
১৪।রাইফেল রোটি আওরত,
১৫। বন্দি শিবির হতে
১৬। একাত্তরের দিনগুলি।
নন্দিত নরকে
সূর্য দীঘল বাড়ি
হাঙ্গর নদী গ্রেনেড
চিলে কোঠার সেপাই
জাহান্নাম হতে বিদায়
---------------------------
এছাড়াও যদি পড়তে চান(কম গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু প্রচলিত পড়া যা সবাই পড়বে ).
আলালের ঘরের দুলাল,
দুর্গেশ নন্দিনী,
কপাল কুন্ডুলা
নকশী কাঁথার মাঠ,
গীতাঞ্জলি,
শেষের কবিতা
নীলদর্পন,
শ্রীকান্ত।
দেয়াল
মৃত্যুক্ষুধা
------------
লেখক হিসেবে পড়তে চাইলে >> বঙ্কিম, রবী, কাজী, শরত , মানিক প্রভৃতি লেখকের বিখ্যাত লেখাগুলো।
পড়ে শেষ করতে পারবেন না । তাই উপরের পনের টা বা বঙ্গবন্ধু/ মুক্তিযুদ্ধ/ ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক বইগেুলোর জোর দিন।
.
. ------------------------------------------------------
কিভাবে লিখবেন?
.
খুব ভালো কমন না , কিন্তু একটু একটু জানেন এই ক্ষেত্রে (মাহফুজুল আলম )
.
যেমন- দেয়াল:মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ঘটনার নির্মোহ চিত্র)
প্যারা-১: কী ধরনের গ্রন্থ? লেখকের নাম।প্রকাশকাল।প্রেক্ষাপট ইত্যাদি ৭-৮ লাইনে।
প্যারা-২: লেখক পরিচিতি ও তিনি কী ধরনের লেখা লেখেন? ইত্যাদি ৮-১০ লাইনে।
প্যারা-৩: কাহিনী সংক্ষেপ/মূলভাব কয়েকটি উদ্বৃতিসহ ১৫-১৬ লাইনে।
প্যারা-৪: গ্রন্থটি কেন আলোচিত/সমালোচিত বা নিষিদ্ধ হয়েছিল?সমাজ জীবনে বইটির প্রভাব ইত্যাদি ৭-৮ লাইনে।
প্যারা-৫: পাঠক হিসেবে বইটি পড়ে কেমন লেগেছে? ৭-৮ লাইনে।
০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০
.
.
ধারণা -- ২ ( মহসিন ভাই )
----------------------------
১. শুরু করতে হবে বইয়ের লেখক, প্রকাশকাল এবং ধরণ দিয়ে, যাকে আমরা উৎস বলতে পারি।
২. বই রচনার প্রেক্ষাপট অর্থাৎ কোন সময় বা ঘটনার প্রেক্ষিতে লেখক রচনাটি লিখতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন।
৩. যদি সম্ভব হয়, পুরো রচনাকে খুবই সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ।
৪. ধরণ হিসেবে রচনাটি কোন জাতের তা নিরূপণ করে সেই ধরণের (উপন্যাস/নাটক/মহাকাব্য ইত্যাদি) বৈশিষ্ট্য বিচারে রচনাটির ভাষা, চরিত্র-চিত্রন(ফ্লাট অথবা রাউন্ড), কথোপকথন (সম্ভব হলে সংলাপ দেয়া), পটভূমি, লেখকের দর্শন ইত্যাদি কতখানি সামঞ্জস্যপূর্ণ তা বিচার করতে হবে।
৫. অন্যান্য খ্যাতিমান লেখকের প্রদত্ত রচনা সম্পর্কে যদি কোন মন্তব্য থাকে তা লিখতে হবে।
৬. তবে কখনই বইয়ের দাম, পৃষ্ঠাসংখ্যা ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে না। কারণ এটা স্বাভাবিক বিচারেই সমালোচনার অংশ নয়। মোহসিনা নাজিলা কর্তৃক লিখিত ‘শিকর’ বইয়ে দাম, পৃষ্ঠাসংখ্যা ইত্যাদি যে সকল তথ্য রয়েছে তা শুধু যারা কিনতে আগ্রহী তাদের সুবিধার্থে উল্লেখ করা হয়েছে।একে সমালোচনার অংশবিশেষ মনে করার কোন অবকাশ নেই।
৭. সবশেষে ব্যক্তিগত অভিমত দিয়ে সমালোচনা শেষ করতে হবে।
প্রকৃতপক্ষে, আমার যা মনে হয়, আমরা যারা বিসিএস পরীক্ষার্থী তাদের বিভিন্ন লেখকের বই সম্পর্কে কতটুকু ধারণা আছে বা আমাদের বই পড়ার অভ্যাস আছে কি-না তা যাচাই করার জন্যেই এই ব্যবস্থা। কারণ হিসেবে বলছি, যেকোন বইয়ের মুখবন্ধ বিষয়টা একটা ফ্যাক্টর। এখানে রচনাটি সম্পর্কে বিভিন্ন জনের মতামত, ভাষা ব্যবহার, সার্থকতা প্রভৃতি দেয়া থাকে। কিন্তু Irony of fate হচ্ছে আমাদের হাতে এখন অত সময় নেই যে আমরা নির্বাচিত কিছু বইয়ের মুখবন্ধও পড়তে পারব।
--------------------------------------------------------------------------
-------------------------
ধারণা -৩ (Aminul Islam Shahed)
---------------------------------------
গ্রন্থ আলোচনা নিয়ে সামান্য টিপস জাতীয় কিছু লেখার আগে আমি ধরে নিচ্ছি যা সম্পর্কে লিখছি সেটা কাব্যগ্রন্থ নয়, এবং বইটা সম্পর্কে ন্যূনতম ধারনা রেখেই লিখছি।
একটি গ্রন্থ সমালোচনা লিখা মানে শুধু গ্রন্থটির কাহিনী বর্ণনা নয়, যেমনটা প্রফেসরস' এ দেখছি।আরো কিছু বিষয়ে আলোকপাত করতে হয়:
> গ্রন্থকারের নাম,পরিচয়
> গ্রন্থ রচনা/ প্রকাশকাল, কোন ধারার রচনা ; উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ ইত্যাদি।
> মূল প্রতিপাদ্য বিষয় কি, লেখকের কোন জীবনদর্শন রচনায় প্রকাশ পেয়েছে কিনা, লেখক কোন শ্রেণী/ পেশাকে প্রতিনিধিত্ব করছেন কিনা( হলে কতটা সফল)।
> লেখাটি কোন ধরণের চেতনার ধারক? রাজনৈতিক/ সমাজচেতনামূলক/ দেশপ্রেম নির্ভর/ রোমান্টিক/ জীবনী/ ভ্রমণকাহিনী/ অন্যকোন মেসেজ নির্ভর?
> এক্ষেত্রে সাফল্য কতটা, সমাজ- সংস্কৃতি ও যুগের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে নাকি নিজেই যুগ প্রভাবিত?
> ভাষা ব্যবহারে কোন বিশিষ্টতা দেখিয়েছেন কিনা, রচনার বক্তব্য বিন্যাস রীতি, প্রবন্ধ না হলে চরিত্র চিত্রণে দক্ষতা/ অদক্ষতা।
> সার্বিক মূল্যায়নে একাধিক দৃষ্টিকোন হতে বিচারের চেষ্টা করা, হতে পারে একদিকে সাফল্য বেশি, অন্যদিকে ততটা হয়তো নয়।
[ বিঃদ্রঃ সাহিত্যের ছাত্র হিসেবে এসব মনে রেখে আমি লিখতাম, কারো টিপস/ স্টাইল এরচেয়েও কার্যকর হতেই পারে]
---------------------------------------------------
আমার অভিমত
.
--------------------
কাঠামোগত ধারণা
---------------------
১. গ্রন্থটির পরিচিতি:
------------------
এ অংশে গ্রন্থটির লেখক পরিচিতি , কোথা থেকে সংগৃহীত হয়েছে , কি ধরণের , প্রকাশকাল ইত্যাদি পরিচিতমূলক কিছুু তথ্য দেয়া উচিত।
২. প্রেক্ষাপট/ পটভূমি
-------------------
গ্রন্থটি কোন প্রেক্ষাপটে রচিত সেটা উল্লেখ করা দরকার , এবং পটভূমি অঙ্কন করতে হবে।
উপন্যাস হলে >> ছোট করে কাহিনী লিখতে হবে এবং প্রধান চরিত্রগুলোর বর্ণনা দিতে হবে।
কাব্য /কবিতা হলে>> বিষয়বস্তু সুস্পষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে ।
.
গ্রন্থ হতে উক্তি / পঙকক্তি দিতে পারলে আরো ভালো হবে।
৩. শিল্পমূল্য
----------------
এ অংশে মূল সমালোচনা করতে হবে যেমন:
--গ্রন্থটির ভাষাগত বা আঙ্গিকতা
-- সমাজচিত্র
-- সাহিত্যেমূল্য>> গ্রন্থটি কালোতীর্থ হবে বা হয়েছে কিনা
৪. উপসংহার
------------------
উপরের কথার প্রেক্ষিতে কয়েকটি বাক্য লিখতে হবে সাথে সাথে নিজের মতামত।
.
.