নারীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে যা প্রয়োজনীয়
.
পুরো পরিবারই দেখাশুনা করেন নারীরা। এজন্য তাদেরকে সারাদিনই অনেক পরিশ্রম করতে হয় তাদের। পরিবারের পাশাপাশি নিজের শরীরের একটু যত্ন না নিলে অল্প দিনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তারা। তখন দায়িত্ব পালন আর সম্ভব হয় না। তবে একজন শিক্ষিত মা শুধু পরিবার নয়, নিজের প্রতিও যত্নবান থাকেন। স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে প্রতিদিন নিয়ম করে নারীদের কিছু ভিটামিন খাওয়া জরুরি। জেনে নিন কি কি ভিটামিন খাবেন প্রতিদিন-
.
ভিটামিন এ:
.
ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে রাতকানাসহ ঘা, অস্থি-ঝিল্লির প্রদাহ ও ক্যারাটোম্যালেশিয়া রোগ হতে পারে। ভিটামিনটি মাসিক ঋতুচক্র, পিণ্ডময় স্তন, যোনি সংক্রমণের সময় অনেক উপকারী। শুধু তাই নয়, স্তন ক্যান্সারেও ভালো কাজ করে ভিটামিন এ। টাটকা সবুজ সবজি ও লাল পাম তেল ভিটামিন এ এর ভালো উৎস।
.
ভিটামিন বি১:
.
এই ভিটামিনের অপর নাম হলো থায়ামিন। অপরিহার্য এই ভিটামিনটি দেহের চিনিকে শক্তিতে রুপান্তরিত করে। যেহেতু নারীদের অতিরিক্ত শক্তির প্রয়োজন হয়; তাই এটি তাদের খাওয়া ভালো। চর্বিহীন মাংস, বাদাম ও শস্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১ রয়েছে।
.
ভিটামিন বি২:
.
এর অপর নাম হলো রিবোফ্লাভিন। এই ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ব্যস্থাকে সচল রাখে। একইসাথে ত্বক, নখ ও চুলের যত্নেও কাজ করে ভিটামিন বি২। দুধ ও সবুজ শাকসবজিতে প্রয়োজনীয় রিবোফ্লাভিন পাওয়া যায়।
ভিটামিন বি৬:
এই ভিটামিনটি পাইরিডক্সিন নামে পরিচিত। মাসিক ঋতুচক্র থেকে শুরু করে গর্ভাবস্থার আগের সময়ে এই সবজিটি খাওয়া ভালো। এতে শুধু নবজাতক পর্যাপ্ত দুধই পাবে না; একইসঙ্গে গর্ভাবস্থায় আপনার হতাশাও কমিয়ে দিবে এই ভিটামিন। অ্যাভোকাডো, কলা ও বাদাম ভিটামিন বি৬ এর ভালো উৎস।
.
ফলিক অ্যাসিড:
.
গর্ভাবস্থায় প্রতিটি নারীর ফলিক এসিড গ্রহণ করা জরুরী। আবার যারা মা হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছেন কিংবা সন্তান জন্মদানের সময় বিভিন্ন সমস্যা এড়াতে চান তাদেরও এই ভিটামিন খাওয়া দরকার। সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায়।
ক্যালসিয়াম:
নারীদের খাদ্য তালিকায় ক্যালসিয়াম প্রথম স্থানে রয়েছে। এর অভাবে অস্টিওপরোসিস রোগ হতে পারে। এই রোগে পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি ভোগে। কাজেই হাড় মজবুত রাখতে নারীদের এটি খাওয়া অবশ্যই জরুরী। দুধের তৈরি খাদ্য ও ডিমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
.
ভিটামিন ডি:
.
খাবারের মাধ্যমে আমরা যে ক্যালসিয়াম দেহে নিয়ে থাকি তা ভিটামিন ডি এর মাধ্যমে হাড় দ্বারা শোষিত হয়। মাছ, মাছের তেল, দুধ, সয়া দুধ, ফলমূলে রয়েছে ভিটামিন ডি। সকালে সূর্যের আলোর মাধ্যমেও দেহে ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ সম্ভব।
.
কোলিন:
.
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স গ্রুপের একটি ভিটামিন হলো কোলিন। গর্ভবতী মহিলাদের নিউরাল টিউব অপূর্ণতা প্রতিরোধ করতে এই ভিটামিন অপরিহার্য। এটি লিভারে উত্পাদিত হয়। ডিম এর চমৎকার খাদ্য উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়।
.
ভিটামিন সি:
.
সুস্বাস্থ্যের জন্য নারী-পুরুষ উভয়েরই ভিটামিন সি খাওয়া উচিত। ভিটামিনটি শুধু আপনার বয়স কমাতে সাহায্য করবে না; বরং ত্বক, চুল এবং নখেরও যত্ন নিবে। সাইট্রাস ফল ও কমলালেবু ভিটামিন সি এর সবচেয়ে ভাল উত্স।
.
ভিটামিন ই:
.
ভিটামিন ই সমৃদ্ধ সৌন্দয্য পণ্যকে সবসময় অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। ত্বককে ভালো রাখায় ভিটামিনটি নারীদের কাছে অনেক বেশি জনপ্রিয়। পাশাপাশি দেরিতে গর্ভাবস্থা এবং মাসিক ঋতুচক্র সংক্রান্ত সমস্যা প্রতিরোধেও সহায়তা করে ভিটামিনটি। এর ভালো উৎস হলো- মাংস, মুরগির মাংস, ডিম ইত্যাদি।