গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে করনীয়।।।। জেনে নিন।।।
সাধারণত,অপুষ্টি, মায়ের ওজন বেশি,অলস জীবনযাপন,ত্রিশ বছরের বেশি বয়সে গর্ভধারন,পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস,হরমোন প্রভৃতি কারনে একজন গর্ভবতী মা গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন।তবে,সন্তান প্রসবের পর এই ডায়াবেটিস এমনিতে ই চলে যায়।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস যদি নিয়ন্ত্রনে না থাকে তবে, গর্ভস্থ সন্তানের আকার বড় হওয়া,অপরিণত শিশু জন্ম নেয়া বা মৃত সন্তান প্রসব হবার মত সম্ভাবনা থাকে।
আশার বিষয় হল,শুধু মাত্র সঠিক এবং সুষম খাদ্যভাসের মাধ্যমে আপনি আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ৯৯.৯৯% নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।সেক্ষেত্রে,আপনার ইনসুলিন বা মেডিসিন নাও লাগতে পারে।আর এক্ষেত্রে, একজন পুষ্টিবিদের সাহায্য নিলে সবচেয়ে ভাল হয়।
যেকোন ধরণের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে,সময় মত এবং সঠিক পরিমাণে খাবার গ্রহন করার কোন বিকল্প নেই।
যেসব মায়েদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস রয়েছে,তাদের উচিত শর্করা জাতীয় খাবার যেমনঃভাত,রুটি,মুড়ি,খই,ওটস, চিড়া,আলু,নুডুলস বা পাস্তা এই ধরণের খাবার গুলো ঠিক যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু গ্রহণ করা।
একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য বড় মিল গুলোতে ৩০-৩৫ গ্রাম শর্করা জাতীয় খাবারই যথেষ্ট।আর,এই পরিমানটা কার জন্য কি পরিমাণ হবে তা নির্ধারিত হবে,একজন মায়ের ওজন, উচ্চতা, শারীরিক অবস্থা,দেহে কোন ধরণের অপুষ্টি আছে কিনা,পরিশ্রমের ধরণ এবং রক্তের সুগার লেভেল অবস্থা বুঝে।
প্রতি ৬০ গ্রাম বা ১/২ কাপ ভাত,৩০ গ্রামের প্রতিটি রুটি,২২ গ্রাম মুড়ি, খই, বা চিড়াতে পাবেন ১৫ গ্রাম শর্করা। সুতরাং,বুঝতেই পারছেন মাত্র ১ কাপ ভাত বা ২ পিস রুটি থেকেই ৩০ গ্রাম শর্করা পাওয়া যাবে।এছাড়া, ফল, দুধ, ফলের রস,দই এবং অন্যান্য অনেক খাবারে ও শর্করা থাকে।তাই,গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের জন্য অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার পরিহার করার কোন বিকল্প নেই।
যেসব মায়েদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আছে তাদের ক্যালরি চাহিদা পূরনের জন্য প্রতি বেলায় প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখা উচিত।
গর্ভকালীন সময়ে ফাইবারের চাহিদা এবং রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিদিন অন্তত ৪০০ গ্রাম শাকসবজি গ্রহণ করা উচিত।
যেসব ফল অতিরিক্ত মিষ্টি সেই ফল গুলো কম পরিমাণে খাওয়া উচিত এবং খেলেও দিনের বেলায় খাওয়া উচিত।
অনেকেই,ভাবেন গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলে হয়ত ডাবের পানি খাওয়া যাবে না।যাদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস রয়েছে তারাও প্রতিদিন ১ গ্লাস বা ২০০ এমঃএলঃ কচি ডাবের পানি খেতে পারবেন।
ছোট মিল গুলোর যেকোন একটিতে রাখতে পারেন ৩০ গ্রাম মিক্স বাদাম।এছাড়া,টক ফল বা মিক্স ফল ও খেতে পারেন স্নাক্স গুলোতে।
নিয়মিত স্বাভাবিক শারীরিক পরিশ্রম,কাজকর্ম বা ব্যায়াম করলে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখা এবং নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা দুটোই বৃদ্ধি পায়।তাই,প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪৫ মিনিট হালকা ব্যায়াম বা হাঁটা হাঁটি করতে পারেন।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে ইনসুলিন বা মেডিসিন ব্যবহার করা হয়।তবে,মেডিসিনের চেয়ে ইনসুলিন বেশি নিরাপদ।তাই,ডাক্তার আপনাকে ইনসুলিন নিতে বললে ভয়ের কোন কারণ নেই।