সাবধান,অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থেকে হতে পারে ক্যান্সার।।।।।।।।
ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত রোগীরা জানেন,যে রক্তের শর্করা যদি নিয়মিত ভাবে অনিয়ন্ত্রিত থাকে,তবে তা শরীরে বিভিন্ন ধরণের জটিলতা সৃষ্টি এবং দেহের প্রতিটি অর্গানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
শুধু তাই,নয় এই অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থেকে হতে পারে বেশ কিছু ধরণের ক্যান্সার।
মনে রাখতে হবে যে,ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে অতিরিক্ত শর্করা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসকে নির্দেশ করে।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস এর কারণে হতে পারে“ "ডিএনএ” ড্যামেজ এবং এই “ডিএনএ” ড্যামেজ, ডায়াবেটিস রোগিদের মধ্যে ক্যান্সার সৃষ্টির কারণ হিসাবে কাজ করে।
যখন রক্তের গ্লুকোজ বেশি থাকে তখন “ডিএনএ” ড্যামেজ অনেকটা স্থায়ী হয়।
যাদের ডায়াবেটিস নেই,তাদের তুলনায় যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের মধ্যে ওভারিয়ান,ব্রেস্ট,কিডনি এবং অগ্নাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা দিগুনের থেকে বেশি থাকে।
আমরা জানি,মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের স্তন ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা অনেক কম।তবে,যেসব পুরুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের স্তন ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা মহিলাদের তুলনায় বেশি।
জর্জ ইন্সটিটিউটের গবেষকগন বিশ্বের প্রায় ২ কোটি মানুষের উপর পর্যবেক্ষনের ভিত্তিতে জানিয়েছেন যে, টাইপ-১ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের মাঝে উল্লেখযোগ্য হারে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাদের মতে,সাধারণ মহিলাদের তুলনায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মহিলাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার হবার সম্বাবনা প্রায় ২৭% বেশি।অপরদিকে,সাধারণ পুরুষদের তুলনায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত পুরুষদের ক্ষেত্রে তা ১৯% বেশি।
“জর্জ ইন্সটিটিউটের” রিসার্চ ফেলো Toshiaki Ohkuma, PhD,এর মতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের যেকোন ধরণের ক্যান্সারে ভোগার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
তবে,ডায়াবেটিসে আক্রান্ত পুরুষের তুলনায় নারীদের ক্যান্সারের সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি।
বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী,টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্যান্সার হবার ঝুঁকি বেশি হবার কারণ হল হরমোনাল ডিসরেগুলেশন।
টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে,রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রনের জন্য ইনসুলিন হরমোন কার্যকর ভাবে কোষে গ্লুকোজ সরবরাহ করতে পারেনা।
ফলে,রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রনের জন্য অগ্নাশয় আরো বেশি পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি করে।ফলে,দেহে হাইপার ইনসুলিনেমিয়া,সংঘটিত হয়।রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি ইনসুলিন হরমোন,কোষের বৃদ্ধিকে উদ্দীপ্ত করতে পারে সম্ভবত এই ব্যাপারটি ক্যান্সার হবার কারণ হতে পারে।
আরেকটি ব্যাপার লক্ষনীয় যে,অধিকাংশ টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওজন এবং শরীরে ফ্যাট তুলনামূলক বেশি থাকে।
যাদের ওজন স্বাভাবিক,তাদের তুলনায় যাদের ওজন বেশি তাদের অতিরিক্ত ফ্যাট টিস্যু থেকে অতিরিক্ত পরিমানে "অ্যাডিপোকিন"হরমোন উৎপন্ন করে।এই হরমোন গুলো দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ সৃষ্টি করে যা ক্যান্সার হবার সাথে সম্পর্ক যুক্ত।
অপর দিকে,টাইপ-১ ডায়াবেটিসে রোগীদের স্টমাক এবং সারভিক্স ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা বেশি।
সুতরাং,বলা যায় সাধারণত মানুষের তুলনায় টাইপ-১ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
তবে,ইচ্ছাএবং আন্তরিকতা থাকলে আমরা খুব সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারি।হেলদি প্লান্ট বেসড ডায়েট,পরিমিত সরল শর্করা প্রতিদিন ৪৫-১ ঘন্টা হাঁটা বা সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ১৫০ মিনিট ২০০ মিনিট ব্যায়াম বা শারীরীক পরিশ্রম করার চেষ্টা করা,পর্যাপ্ত ঘুম,সময় মত মেডিসিন/ইনসুলিন নিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখার মাধ্যমে ক্যান্সার বা ডায়াবেটিসের অন্যান্য জটিলতা এড়িয়ে চলা সম্ভব।