ড্রাগন ফ্রুট পুষ্টির পাওয়ার হাউজ... জেনে নিন খাওয়ার উপকারীতা।।।।।।।।।।
দেখতে ভয়ংকর “বিলুপ্ত প্রানী” ড্রাগনের মত বলেই হয়ত ফলটির নাম ড্রাগন ফ্রুট।যার আদি নিবাস সাউথ আমেরিকা।তবে,আদি নিবাস যেখানেই হোক না কেন আমাদের দেশে ফলটি খুঁজে পেতে খুব বেশি কষ্ট করার প্রয়োজন পড়ে না।যেকোন সুপার সপে বা ফলের দোকানে পাওয়া যাবে ফলটি।অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং লাভজনক বলে বাংলাদেশে ও সীমিত আকারে এই ফলটির চাষ শুরু হয়েছে।
গাড় বেগুনী,লাল বা হলুদ বর্নের এই ফলটিতে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-বি১, বি২, বি৩, আয়রন,ফসফরাস,পলি ফেনলস, এনজাইমস, প্রোটিন সহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান।
ড্রাগন ফ্রুটে জলীয় অংশ এবং ফাইবারের পরিমাণ বেশি হবার কারণে পেটের নানা সমস্যা দূর করতে এটি বেশ কার্যকর।বিশেষ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রে এটি বেশ উপকারী।
আমাদের দৈনিক আয়রন চাহিদার ৮% পূরণ হতে পারে ড্রাগন ফ্রুট থেকে।এই আয়রনের অভাব জনিত কারণে আমাদের দেশে মহিলা এবং শিশুরা এনিমিয়া ভুগে থাকে।যা নানা কারণে পরবর্তীতে বিপদজ্জনক বলে বিবেচিত হতে পারে।বিশেষ করে বিষটির সাথে কিডনির কার্যকারীতা কমে যাবার সম্পর্ক রয়েছে।
ড্রাগন ফ্রুট “অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক” উপাদান হিসাবে বিবেচিত লাইকোপেন নামক এনজাইমে সমৃদ্ধ পাশাপাশি, অন্যান্য ক্যান্সার বিরোধী উপাদান ক্যারোটিন এবং ভিটামিন-সি এর খুব ভাল উৎস।এই,তিন ধরণের উপাদান গুলো এক সাথে টিউমার সেলের গঠনকে বাঁধা প্রদান করে।শুধু ফল নয়,ফলের খোসাটি পলি ফেনলেসের ও খুব ভাল উৎস যা নির্দিষ্ট কিছু ক্যান্সার থেকে আমাদের রক্ষা করে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে,ড্রাগন ফ্রুট জন্মগত গ্লুকোমা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।এই ফলটি হিউমান সাইটোক্রম-পি ৪৫০ কে প্রতিরোধ করতে পারে।এই,উপাদানটি কনজেনিটাল গ্লুকোমার সম্ভাবনার সাথে সম্পর্ক যুক্ত।যদিও সাইটোক্রম-পি ৪৫০ লিভারে পাওয়া যায় এবং কিডনি এবং লান কে সঠিক ভাবে কাজ করতে ও সহায়তা করে।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প নেই।ড্রাগন ফলটি গর্ভবতী মায়েদের জন্য বিশেষ ভাবে উপকারী।বিশেষ করে আয়রন,ফাইবার এবং ফোলিক এসিডের বাড়তি চাহিদা মেটাতে এই ফলটি বিশেষ ভাবে উপকারী।
কিডনির কোন সমস্যা থাকলে,রেনাল সিস্টেম ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য ভিটামিন-ডি কে অ্যাক্টিভ করতে পারেনা।ফলশ্রুতিতে,হাড় খুবই দূর্বল হয়ে যায়।তাই,উচ্চ পরিমাণে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ ড্রাগন ফল হাড়ের সমস্যা কমাতে বেশ কার্যকর।
ডেঙ্গুর সময় প্লাটিলেট বাড়াতে ড্রাগন ফ্রুটের শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট বেশ কার্যকর।সুতরাং,ডেঙ্গু হলে ইমিউন সিস্টেমকে দ্রুত শক্তিশালী করতে এবং প্লাটিলেট কাউন্ট বাড়াতে ড্রাগন ফ্রুট বা এর জুস খাওয়া যেতে পারে।
ড্রাগন ফ্রুটে থাকা বিশেষ প্রোটিন এবং এনজাইম আমাদের দেহ কোষের পুনর্গঠন ও রিপেয়ার করতে সাহায্য করে।
যারা,প্রায় চুলে কালার করেন তাদের চুলের যত্নে এটি খুব উৎকৃষ্ট একটি উপাদান।পরিমাণ মত ড্রাগন ফল পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট করে চুলে লাগিয়ে,৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।সপ্তাহে ১ বার এই উপাদানটি ব্যবহার করলে হেয়ার ড্যামেজ এবং হেয়ার ফল উভয়ই দূর হবে।
পাশাপাশি,রক্ত পিউরিফাই করতে,ফ্যাটি লিভার দূর করতে,দৃষ্টি শক্তি ভাল রাখতে এবং ফ্লু জনিত সর্দি জ্বর দূর করতে ড্রাগন বা পিটাইয়া ফলটি বিশেষ উপকারী।
সুতরাং,সুস্থ থাকতে এবং দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহের জন্য দেশি ফলের পাশাপাশি মাঝে মাঝে এই ফলটি আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন।