সন্তান কনসিভ করা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
একজন নারী বা পুরুষের জন্য জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া হচ্ছে সন্তান। কিন্তু অনেক কারনেই কনসিভ করা কঠিন হয়ে পড়ে। সন্তান সম্ভবা হওয়ার আগেও মেয়েদের কেয়ার প্রয়োজন সেটা আমাদের দেশে অনেকেই জানেনা। যার ফলে কনসিভ করাটা হয়ে পরে আরো কঠিন। এই কারনে অনেকে ডিপ্রেশন এ ভোগা শুরু করেন। তাই আজ কিছু বিষয় জানানোর চেষ্টা করবো, যেটা সহজে কন্সিভ করতে সাহায্য করবে।
১। একজন মেয়ের অবশ্যই তার মেনস্ট্রুয়েশন সাইকেল স্পম্পর্কে জেনে রাখা উচিৎ। যারা বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করছেন তাদের জানতে হবে কখন আপনার ডিম্বাণু সবচেয়ে বেশী পরিনত, সেই সময়ে বাচ্চা কনসিভ করার চান্স সবচেয়ে বেশী। আপনার মাসিক যদি নিয়মিত হয় তাহলে আপনার পরবর্তী মাসিক এর দুই সপ্তাহ আগে আপনার কনসিভ করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। পুরুষের শুক্রানু ৬ দিন পর্যন্ত জরায়ু তে বেঁচে থাকতে পারে। তবে যাদের মাসিক অনিয়মিত তাদের জন্য এই সময় টা বলা কঠিন, অনিয়মিত মাসিক যাদের তাদের পরবর্তী মাসিক এর ১২-১৬ দিন আগে কনসিভ করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। তাছাড়াও তারা ভালোভাবে বোখার জন্য আরো একটি পরীক্ষা করতে পারেন। নিয়মিত আপনার যোনীর মিউকাস(পিচ্ছিল পদার্থ যেটা মেয়েদের উত্তেজনার সময় নিসৃত হয়) পরীক্ষা করুন। যদি মিউকাস খুব পাতলা, স্বচ্ছ ও পিচ্ছিল হয় তাহলে সে সময় কনসিভ করার সম্ভাবনা বেশী। কারন এই মিউকাস শুক্রানু কে ডিম্বাণু পর্যন্ত পৌঁছাতে সাহায্য করে।
২। আপনার ওজনের দিকে খেয়াল রাখুন। আপনার BMI যদি ৩৫ এর বেশী হয় তবে সেটা কন্সিভ করায় বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে। কারন যাদের ওজন বেশী তাদের এস্ট্রোজেন বেশী নিসৃত হয়, যেটা কন্সিভ করতে বাঁধা সৃষ্টি করে। আবার যাদের BMI ১৯ এর কম তাদের মাসিক অনিয়মিত হতে পারে, তাই তাদের ও কন্সিভ করতে সমস্যা হতে পারে।
৩। বেশী করে ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। সবুজ শাক-সবজি, ব্রকলি, সাইট্রিক এসিড যুক্ত ফল ও কমলার রস খেতে হবে।
৪। ক্যাফেইন খুব বেশী খাওয়া যাবেনা। প্রতিদিন দুইকাপের বেশী চা বা কফি খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
৫। এক্সারসাইজ করুন নিয়মিত। হাঁটা অথবা হালকা ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ করুন কিন্তু ভারী এক্সারসাইজ করা যাবেনা। ভারী এক্সারসাইজ কনসিভ করতে বাঁধা সৃষ্টি করে।
৬। অনেকেই যারা অনেক ট্রাই করার পর ও কনসিভ করছেন না, তারা একটা সময় ডিপ্রেসড হয়ে যান। অনেক স্ট্রেস এ থাকেন। এই স্ট্রেস কনসিভ এর জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই ধৈর্য্য হারাবেন না, স্ট্রেস নেবেন না। হাসিখুশি থাকুন।
৭। জানুন কখন আপনার ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিৎ। সমস্যা নারী বা পুরুষ দুইজনের ই থাকতে পারে। কিন্তু প্রথমেই চিন্তিত হয়ে পরবেন না। কোনো ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া ৬ মাস নিয়মিত ইন্টারকোর্স এর পর ও যদি কন্সিভ না করেন তাহলে ডাক্তারের কাছে যান। নইলে অযথাই উদ্বিগ্ন হবেন না, ধৈর্য্য ধরুন।
৮। শুধু যে মেয়েদের ই সতর্ক থাকতে হবে তা নয়, ছেলেদের ও এই সময় সতর্ক থাকতে হবে। কনসিভ করার চান্স সর্বোচ্চ তখনি থাকবে যখন শুক্রানু শক্তিশালী হবে। তাই ছেলেদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
* তামাক জাত দ্রব্য ছাড়তে হবে।
* বেশী করে ফলিক এসিড, জিংক সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
* গরম পানি দিয়ে গোসল কমাতে হবে। কারন গরমে শুক্রানু নিস্তেজ হয়ে যায়।
* মোবাইল প্যান্ট এর পকেটে রাখা বন্ধ করতে হবে।
* সয়া যুক্ত খাবার কম খেতে হবে।
৯। অনেকের ধারনা ইন্টারকোর্স এর পজিশন এর কারনে প্র্যাগন্যানসি এর চান্স বাড়ে। এটা সম্পুর্ন ভুল ধারনা। এমন কোনো পজিশন নেই যেটা প্র্যাগন্যানসি এর চান্স বাড়াতে পারে।
১০। ইন্টারকোর্স এর পর ১০-১৫ মিনিট এর মাঝে বাথরুমে যাবেন না। এই সময় টা শুয়ে থাকুন যেন শুক্রানু ডিম্বানু পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
আরো কোনো বিষয় জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন, সাহায্য করার চেষ্টা করবো। হেজিটেট করবেন না। ধন্যবাদ।