বিভিন্ন দেশের সীমান্তরেখা ও সীমান্ত সংকটের স্বরুপ
------------------------------------------------------------------------
বর্তমান পৃথিবীর দেশগুলো ( আফ্রিকা,মধ্যপ্রাচ্যের দেশ,এশীয়ার বিভিন্ন দেশ) বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে অন্যতম একটি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল হয়ে দাড়িয়েছে । এখানকার সংঘাতের পেছনে বিভিন্ন উপাদান কাজ করছে। তবে প্রত্যেকটি সংঘাতের পেছনেই অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা, দারিদ্রতা এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। তবে দেশগুলোতে অন্যতম একটি সমস্যা হল সীমান্ত সমস্যা। বিভিন্ন গবেষকদের মতে উপনিবেশীক শক্তিগুলোর সীমান্ত বিভাজনই সীমান্ত সংকটের প্রধান কারণ।
ম্যাকমোহন লাইনঃ
এই ম্যাকমোহন লাইন ১৯১৪ সালে সিমলা চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটেন ও তিব্বতের স্বীকৃত হয়। স্যার ম্যাকমোহন কর্তৃক নিরুপিত সীমানাকে (ম্যাকমোহন লাইন) চীন কখনই মেনে নেয়নি; তবে এটাকে ‘লাইন অব কন্ট্রোল’ হিসেবে মেনে চলছে দুই দেশই। বর্তমানে এটি ভারত ও চিনের মধ্যে আইন স্বীকৃত সীমানা, যদিও চিন সরকার একে বিতর্কিত অংশ বলে মনে করে। লাইন নামকরণ করা হয় স্যার হেনরি ম্যাকমোহনের নামে, যিনি ব্রিটিশ ভারত সরকারের পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন এবং সিমলা আলোচনার প্রধান আলোচক। হিমালয় বরাবর ভুটান থেকে ৫৫০ মাইল (৮৯০ কিমি) প্রসারিত করা হয়। যার মধ্যে পশ্চিমে ১৬০ মাইল (২৬০ কিমি)। বাকিটা ব্রম্ভপুত্রের বাঁক ধরে প্রসারন করা হয়। ১৯০৭ সালের অ্যাংলো-রাশিয়ান কনভেনশন অসম্পূর্ণ থাকার কারণে প্রথমে সিমলা ব্রিটিশ সরকার একে প্রত্যাখ্যান করে। ১৯২১ সালে এর নিন্দা করা হয়। ১৯৩৫ সালে সরকারি ভাবে ম্যাকমোহন সীমা প্রকাশিত হয়। ভারত এবং চিনের মধ্যে বিবাদ রয়েছে মোট ৩৪৮৮ কিমি দীর্ঘ এলাকা নিয়ে। ম্যাকমোহন লাইন অনুযায়ী, অরুণাচলের পুরোটাই ভারতের মধ্যে পড়েছে। কিন্তু চীন এখন সেটি স্বীকার করতে চায় না।এ পর্যন্ত তা মেটাতে দু’দেশই নিজেদের মধ্যে প্রায় ২০ দফা আলোচনা করেছে। কিন্তু সুফল মেলেনি।
ডোকলামঃ চীন ও ভুটানের মধ্যে দ্বন্দ্ব ডোকলাম এলাকা নিয়ে, যা ভারত, চীন ও ভুটানের সীমান্তের সংযোগ স্থলের খুব কাছে অবস্থিত।চীন ও ভুটানের বিপরীতে, ভারত ডোকলাম অঞ্চলটিকে নিজেদের বলে দাবি করেনি, কিন্তু ভুটানের দাবিকে সমর্থন করে। ডোকলামের বিরোধ নিয়ে চীনের দাবি ছিল যে চীন ও ব্রিটেনের মধ্যে ১৮৯০ সালের ক্যালকাটা কনভেনশনেরউপর ভিত্তি করে। গত বছর ভুটানের ডোকলাম সীমান্ত ঘিরে চীন ও ভারতের মধ্যে ৭৪ দিন ধরে উত্তেজনা চলে। পরে ২৮ আগস্ট চীনের দাবি মেনে নিয়ে ভারত ওই উপত্যকা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করলে উত্তেজনার অবসান ঘটে।