মানসিক অবসাদের কারণ খুঁজতে গেলে আপনি ব্যক্তি বিশেষে এত কারণ পাবেন যে আপনিই মানসিক অবসাদে পড়ে যাবেন।
আপনি মনে করছেন যে এটা কেমন কথা হলো, সত্যি বলছি মানসিক অবসাদের কারণ সকলের জন্য সমান নয়, সকলে একই কারণে মানসিক অবসাদে ভোগে না। কারণ হিসেবে বলবো মানুষ গুলো যেহেতু আলাদা তাদের মনও আলাদা আলাদা। তাই এই মনের রোগের কারণও আলাদা আলাদা।
এই মানসিক অবসাদ এখন প্রায় সকল মানুষের মধ্যেই দেখা যায়, তার কারণ হলো এখনকার জটিল সমাজব্যবস্থা (complex society), জটিল জীবন (complex life), জীবনে ভালোভাবে বেঁচে থাকার চাপ, শারীরিক ও মানসিক সম্পর্ক ইত্যাদি ইত্যাদি।
যেমন উদাহরণ স্বরূপ বলি -
●একটা বাচ্চার কাছে পড়াশুনার চাপ, পড়াশুনা ঠিক ঠাক না করতে পারলে মানসিক অবসাদ আসছে। এর জন্য অনেক শিশুর মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে।
● একটা যুবকের কাছে বেকার অবস্থার চাপ পড়াশুনা করার পর তাকে একটা ভালো কাজ করতে হবে, ভবিষ্যতে মা বাবা পরিবারের দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু এখন এতো পড়াশুনা করা ছেলে মেয়ে বেরোচ্ছে যে তাদের পর্যাপ্ত চাকরি নেই, তাই যুবকরা মানসিক অবসাদে ভূকছে।
● একটা চাকরি করা প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির চাপও অনেক। যেমন সংসার থাকলে তার চাপ না থাকলেও চাপ আবার অফিসে চাপ ইত্যাদি ইত্যাদি।
যাই হোক আর উদাহরণে যাবো না। সুতরাং মানসিক অবসাদের জন্য দায়ী বিভিন্ন বয়সের মানুষের কাছে ব্যক্তি বিশেষে বিভিন্ন।
★ আমরা মাঝে মাঝে কাওকে দেখি মনে মনে বলি ইস, আমার জীবনটা ওই ব্যক্তির মতো হলে কত ভালো হতো, সে কত বড় চাকরি করে, তার জীবন সঙ্গী কত সুন্দর, কত বড় লোক, কিন্তু সেই লোকটি তার জীবনে কতটা ভালো আছে জানি না।
সুতরাং আমরা মানুষের বাইরের দিকটা দেখে বিচার করতে যাই কিন্তু তার ভেতরের দিকটা দেখি না। এভাবেও আমাদের মানসিক অবসাদ তৈরি হয়।
আমাদের অর্থাৎ মানুষদের আশা আকাঙ্খা বিভিন্ন সময়ে এত বেশি থাকে বলে সেই আশা আকাঙ্খা পূরণ নাহলে মানসিক অবসাদ তৈরি হয়।
■ এবার আসি মানসিক অবসাদগ্রস্ত ব্যক্তিরা কি চায়!!! যখন কেউ অবসাদে ভোগে তখন মনের মধ্যে কিছু অস্থিরতা তৈরি হয় তারা চাই বা ভাবে যে অন্যরা তাকে বুঝুক তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুক; কিন্তু তা হয় না। কারণ আপনার সঙ্গে যারা থাকে যারা আপনাকে বা আপনার মনকে বুজতে পারে না সঠিক ভাবে।
তাই বলবো মানসিক অবসাদ থেকে বেরিয়ে আসার বা ভালো থাকার উপায় হলো নিজেকে চেনা, নিজেকে জানা। মা, বাবা বা কাছের কোনো মানুষ যে আপনাকে নিঃস্বার্থ ভাবে জানে বোঝে তাদের সঙ্গে আপনার মনের অবস্থা শেয়ার করুন।তারা যদি আপনাকে ভালো বোঝে তাহলে আপনার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবে। কিন্তু ভুলেও এমন কাওকে বলবেন না যে আপনার সামনে ভালো দেখায় কিন্তু পেছনে খারাপ, মানে স্বার্থপর।
আর বলবো সময় দিন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে।
যেটা আপনার করতে ভালো লাগে সেটা করুন, যেমন ভালো বই পড়তে পারেন, কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন, গান শুনতে পারেন, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে পারেন।