টাইপ-১ এবং টাইপ-২,ডায়াবেটিস আক্রান্তদের যে বিষয় গুলো জেনে রাখা ভাল।।।।।
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা একবার হলে সারা জীবনে কখনো ভাল হয়না এই তথ্যটি সবারই জানা। বাস্তবতা যখন এমনই তখন ডায়াবেটিস নিয়ে ভয় নয় বরং প্রয়োজন সচেতনতা।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ৮৮% জেনেটিক ফ্যাক্টর বাকি ১২% নন জেনেটিক ফ্যাক্টর দায়ী।নন-জেনেটিক ফ্যাক্টরের মধ্যে ওবিসিটি,নিয়মিত অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ,শারীরিক পরিশ্রমের অভাব এবং স্ট্রেস ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
ডায়াবেটিস হরমোনাল রোগ,মূলত শর্করা বিপাকের ত্রুটি থেকে মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন।শর্করা বিপাকের জন্য যে পরিমাণ ইনসুলিন দরকার তা যদি দেহে তৈরি না হয় তবে রক্তে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি শর্করা থাকে।
মনে রাখতে হবে,ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে বিভিন্ন ধরণের শারীরিক জটিলতা বৃদ্ধি পায়।বিশেষ করে,স্কিন ইনফেকশন,চোখের সমস্যা,হৃদ রোগের জটিলতা,ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি বা নার্ভের সমস্যা,ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি বা কিডনির সমস্যা সহ আরো অনেক ধরণের জটিলতা দেখা দেয়।
১৮ বছর বয়সের নীচে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তাদেরকে সারা জীবন ইনসুলিন নিতে হয়।১৮ বছরের উর্ধে কারো ডায়াবেটিস হলে ইনসুলিন না নিয়ে ও শুধু মাত্র ডায়েট এবং সঠিক জীবন যাপনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব।
সরল শর্করা যেমনঃ ভাত, রুটি,চিনি, গুড়,মধু,জুস, কোল্ড ড্রিঙ্কস,রক্তের গ্লুকোজের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।তাই,যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু সরল শর্করা গ্রহণ করা উচিত।অর্থাৎ,বেশি পরিমাণে জটিল শর্করা যেমনঃশাকসবজি এবং কম মিষ্টি বা টক ফল খাওয়া উচিত পাশাপাশি, পর্যাপ্ত আমিষ জাতীয় খাবার ও স্বাস্থ্যসম্মত ফ্যাট গ্রহণ করা উচিত।
ডায়াবেটিস আক্রান্তদের সকালের নাস্তা খুব ভাল ভাবে করা উচিত এবং রাতের খাবার ৭-৯ টার মধ্যে খেয়ে ফেলা উচিত।এতে করে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রন করা সহজ হয়।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবশ্যয় পায়ের যত্নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত।ডায়াবেটিস হলে পায়ের নানা সমস্যা দেখা দেয়।অনেক সময় অনেকের পা কেটে ফেলার ও দরকার হয়।ওজু করা বা পা ধোবার পর খুব ভালভাবে পা এবং পায়ের আঙুলের মাঝে মুছে নেয়া উচিত।গোসলের সময় পায়ের নীচে ভালভাবে পরিষ্কার করা উচিত যেন ডেড সেল উঠে যায়।
ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে সুগার মনিটরিং বা নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ চেক করার কোন বিকল্প নেই।এটি,আপনার মেডিসিন ডোজ বা ইনসুলিনের সঠিক ডোজ ঠিক করার জন্য গুরুত্বপূর্ন।
যাদেরকে নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয়,তারা ইনসুলিন নেবার পর যত দ্রুত সম্ভব খাবার গ্রহণ করবেন।ইনসুলিন নেবার পর ৩০ মিনিটের মধ্যে খাবার খেয়ে নিতে হবে।না,হলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হবার সম্ভাবনা প্রবল।
ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়ম করে প্রতিদিন ৪৫ মিনিট -১ ঘন্টা হাঁটা উচিত।এসময়,আরামদায়ক জুতা এবং সুতির মোজা ব্যবহার করা উচিত।হাটার সময় পকেটে কিছু মিষ্টি জাতীয় খাবার রাখা উচিত।সুগার লেভেল কমে যাচ্ছে মনে হলে সাথে সাথে খেয়ে নেয়া উচিত।
ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিবছর একবার ডেন্টাল চেক-আপ,চোখের পরীক্ষা,লিপিড প্রোফাইল এবং সিরাম ক্রিয়েটিনিন টেস্ট করা উচিত।এছাড়া,বছরে ২ বার A1c test করা উচিত।
ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন অন্তত ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।৬ ঘন্টার কম এবং ৯ ঘন্টার বেশি ঘুম বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
সুতরাং বলা যায় যে,শুধু মাত্র নিয়ম তান্ত্রিক জীবন যাপন,শারীরিক পরিশ্রম এবং সঠিক খাদ্যাভাসের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৭০% কমানো সম্ভব।