প্রশ্নঃ বঙ্গবন্ধু কী জাতির জনক নাকি জাতির পিতা?
উত্তরঃ
১৯৭১ সালের ৩ মার্চ পল্টন ময়দানের জনসভায় পঠিত স্বাধীনতার ইশতিহারে বঙ্গবন্ধুকে “জাতির জনক” হিসেবে ঘোষণা করেন তৎকালীন ডাকসু ভিপি আ.স.ম. আব্দুর রব।
আবার, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৪(ক), ১৫০(২) নং অনুচ্ছেদ এবং ৫,৬ ও ৭ নং তফসিলে তাকে “জাতির পিতা” বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, পিতা এবং জনক শব্দদুটির মধ্যে অর্থগত কোন পার্থক্য নাই কারন, যিনি জন্ম দেন তিনিই জনক বা পিতা। তবে এটা বলায় যে, “জাতির জনক” হলো বঙ্গবন্ধু্র উপাধী এবং “জাতির পিতা” হলো তাঁর সাংবিধানিক স্বীকৃতি।
///
একটি প্রশ্ন ছিল, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণার পরেও সরকার গঠনের যৌক্তিকতা কী ছিল, এটা তো দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও গঠন করা যেত? প্রশ্নটি করেছিলেন এক্সটার্নাল-২ যিনি ছিলেন চমৎকার একজন নারী, আন্তরিক এবং সুহৃদ। এই প্রশ্নের উত্তরে আমি তিনটি কারণ উল্লেখ করেছিলাম- (Jahangir Noman)
১. যেহেতু একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের ঘোষণা করা হয়েছে সেহেতু একটি সরকার গঠন রাষ্ট্র হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।
২. ঘোষিত স্বাধীনতা যুদ্ধ ও মুক্তিসংগ্রাম পরিচালনার জন্যে সুপ্রিম কমান্ড থাকা দরকার যাতে পুরো যুদ্ধটা সমন্বয়ের মাধ্যমে সব ধরনের বাহিনী পরিচালনা করা যায়।
৩. সর্বোপরি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও ভারতের সাথে দ্বিপক্ষীয় সাহায্যের জন্যে একটি বৈধ সরকার থাকা উচিত কারণ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বৈধ প্রতিনিধি ছাড়া বাংলাদেশের কারো সাথে দেখা করতে চাচ্ছিলেন না।
মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত প্রবাসী সরকার কি বৈধ ছিল? হ্যাঁ বৈধ ছিল। কারণ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামিলীগ তার জাতীয় পরিষদ এবং প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের নিয়ে এই সরকার গঠন করেছিল এবং ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে অধ্যাপক ইউসুফ আলী অস্থায়ী সংবিধান (স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র) পাঠ করে উপস্থিত সাংবাদিক ও এমএনএ ও এমপিএদের শোনান। এই অস্থায়ী সংবিধান ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৭ম তফসিলে সংযুক্ত রয়েছে।