সম্প্রতি নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবীদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দোপধ্যায় সম্পর্কে ইন্টারেস্টিং কিছু তথ্য নিম্নে উপস্থাপন করা হলো:
১. অভিজিৎ এর কলকাতার বাসার কাছেই ছিল একটি বস্তি। শৈশব ও কৈশোরে অভিজিৎ বস্তির ছেলেদের সাথে খেলাধূলা করে বড় হয়েছেন।
২. অভিজিতের বাবা মা দুজনেই ছিলেন অর্থনীতির অধ্যাপক। তাদের সন্তানরা যাতে গরীবদের কষ্ট বুঝতে পারে, এজন্য তাদের সাথে মিশতে দিতেন সন্তানদের।
৩. অভিজিৎ জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকা অবস্থায় তাহির জেলে কাটিয়েছেন ১২ দিন। ভর্তি ফি কমানোর আন্দলনে যুক্ত থাকা ছিলো এর কারণ । তবে পুলিশ তাদের উপাচার্য হত্যা চেষ্টার অভিযোগে আটক করেছিল।
৪. কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সরাসরি যুক্ত না থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে বামধারার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন তিনি।
৫. গত নির্বাচনে কংগ্রেসের মেনিফেস্টো 'নয়া'র কারিগর ছিলেন তিনি
৬. তার পরামর্শ অনুযায়ী দরিদ্র দেশের ৮০ লাখ পরজীবী আক্রান্তদের মধ্যে বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ করে WHO ( World Health Organization)।
৭. দারিদ্র নিরসনে গুনগত মানের শিক্ষার কার্যকারীতার উপর গবেষণা করেছেন তিনি। তার গবেষণার ফলাফল হিসেবে দরিদ্র দেশগুলোর প্রায় ৫০ লাখ শিশু উন্নত মানের শিক্ষক ও গুনগত মানের শিক্ষা পেয়েছে ইতিমধ্যে।
৮. অভিজিৎ, এস্থার ও ক্রেমারকে সাথে নিয়ে ব্রাকের আলট্রা পুওর গ্রাজুয়েশন মডেল নিয়ে কাজ করেছিলেন। তারা এই মডেলের ভাল মন্দ বিশ্লেষণ করে আরও ইফেক্টিভলি কিভাবে দারিদ্রের চক্র ভাংগা যায়, পরিক্ষামূলক পদ্ধতিতে গবেষণা করেছিলেন।
৯. অভিজিৎ ব্যানার্জি জাতিসংঘের এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) পলিসি মেকার টিমের অন্যতম সদস্য ছিলেন যাকে সরাসরি নিয়োগ দিয়েছিলেন মহাসচিব বান কি মুন।
১০. অভিজিৎ অর্থনীতিবীদ হিসেবে আমেরিকার জাতীয় পর্যায়ের কয়েকটি পুরষ্কার ও ফেলোশিপ অর্জন করেছেন।
১১. স্ত্রী ও সহকারী গবেষক এস্থার ডাফলোর সাথে দারিদ্র নিরসনে মাঠপর্যায়ে ২০০ গবেষণা করেন তিনি। স্ত্রী এস্থার একসময় তার ছাত্রী ছিলেন। এস্থার ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞানের ছাত্রী ছিলেন। অর্থনীতিতে আগ্রহী ছিলেন কিন্তু বুঝতে পারছিলেন না, কেরিয়ার হিসেবে কি নেবেন, অর্থনীতিও পড়বেন কিনা। অভিজিৎ তাকে অর্থনীতি নিয়ে পড়তে মোটিভেট করেন এবং অর্থনীতিবীদের কেরিয়ার বেছে নিতেও মোটিভেট করেন। বিয়ের আগেই তারা একসাথে থাকতেন, সন্তানও ছিল তাদের। বিয়ে করেন ২০১৫তে।
১২. তিনি খুব ভাল রান্না করেন। অবশ্য তার বাবা-মাও খুব ভাল রান্না করতেন। কর্মজীবী পরিবারের সন্তান হওয়ায় অভিজিৎ ছোটবেলা থেকেই মাকে সব ধরণের কাজে সাহায্য করে অভ্যস্ত। ৫ ও ৭ বছর বয়সী শিশু সন্তান ও এস্থারের জন্য তিনিই রান্না করেন সাধারণত। এস্থার বলেন, কোন রান্না প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে নিশ্চিতভাবে সেখানেও জয়ী হতেন তারা।
১৩. মোদী সরকারের সময়ের অর্থনীতির কঠোর সমালোচক অভিজিত। অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে এখনকার ভারতীয় অর্থনীতি দ্রুত গতিতে দূর্বল হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। ধনীদের ট্যাক্স বাড়িয়ে গরীবের হাতে টাকা দেয়ার নীতি নিতে বলেছিলেন তিনি মোদি সরকারকে।
১৪. তার প্রথম স্ত্রী অরুন্ধুতি তুলি বন্দোপধ্যায়ও এম আই টি'র অর্থনীতির অধ্যাপক।
১৫. ভোরে নোবেল কমিটি থেকে ফোন পেয়ে কথা বলে আবার ঘুমাতে গেছিলেন অভিজিত। কেননা অন্যদের খবরটা জানানো, অভিনন্দন বার্তার উত্তর দেবার চেয়ে ঘুমটাকেই তার কাছে গুরূত্বপূর্ন মনে হয়েছিল।
তথ্যসূত্রঃ ইন্ডিয়া টাইমস, আনন্দবাজার, বিবিসি বাংলা, হিন্দুস্থান