মেজবান আর মেজবানির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে— আতিথেয়তা, মেহমানদারি অথবা অতিথিদের জন্য বিশেষ ভোজের ব্যবস্থা। কোনো উপলক্ষ সামনে রেখে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ আত্মীয়, পাড়া-পড়শী, বন্ধুবান্ধব, গরিব-দুঃখী মানুষের জন্য এ ভোজের আয়োজন করে। মূল খাবারের তালিকায় থাকে গরুর মাংস ও সাদা ভাত।
মানুষের মনে বদ্ধমূল ধারণা, মেজবানের মাধ্যমে খাওয়ার পর তৃপ্তিসহকারে খোদার কাছে যদি কেউ মোনাজাত করে, তাহলে বিধাতা তা কবুল করেন। এজন্যও মেজবান আয়োজনে লোকজন এগিয়ে আসেন। তৃপ্তিদায়ক খাবারের মাধ্যমে মনোবাসনা পূরণেও ধনী-গরিব সবাই মেজবানের আয়োজন করে।
মেজবান চট্টগ্রামের মানুষের জীবনে বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ একটি অনুষ্ঠানের নাম। আগত অতিথি ধনী-গরিব, ছোট-বড় সবাই এক হয়ে যায় মেজবানে। এখানকার মানুষের বিশ্বাস, ‘অনেক সময় ফকির দরবেশগণ ঈমানী পরীক্ষার জন্যে ছদ্মবেশে আসেন। ছদ্মবেশী ফকির দরবেশ সন্তুষ্ট হলে সেই মেজবান কবুল হয়ে যায়।’ তাই সাবধান হয়ে সব অতিথিকে সমান চোখে দেখে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার মতো খাওয়ানো হয়। এভাবে মানুষকে মেজবান খাওয়ানোর চাটগাঁয়ের এ ভোজন সংস্কৃতি দিন দিন সারা দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ছড়িয়ে পড়ছে মেজবানের খ্যাতিও।