প্রথমে চিত্রলিপির আবির্ভাব ঘটে এবং সেখান থেকে কালের বিবর্তনে সৃষ্টি হয় বর্ণ বা সিলেবলভিত্তিক লিপির। এ পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া সবচেয়ে প্রাচীন বর্ণমালাভিত্তিক লিপিটি হল ফিনিশীয় লিপি, যা ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত ফিনিশীয় জাতির লিপি ছিল। তাদের লিপিতে বাইশটি ব্যঞ্জনবর্ণ ছিল। গ্রিক ও ইহুদীরা ফিনিশীয়দের কাছ থেকে বর্ণমালার ধারণা ধার করে। গ্রিক বর্ণমালায় বর্ণের সংখ্যা ২৪। তারা ব্যঞ্জনবর্ণের পাশাপাশি স্বরবর্ণেরও প্রচলন করেছিল। পরে গ্রিকদের কাছ থেকে রোমানরা লিপির ধারণা নেয়। রোমান বর্ণমালা থেকেই পরে প্রায় সমস্ত ইউরোপের বিভিন্ন ভাষার বর্ণমালা তৈরি হয়ভারতবর্ষের ব্রাহ্মীলিপির পেছনেও ফিনিশীয় লিপির প্রভাব আছে বলে মনে করা হয়। তবে প্রাচীন ভারতীয়রা সম্ভবত স্বাধীনভাবেই নিজেদের লিপি উদ্ভাবন করেছিল ভারতবর্ষের হরপ্পা ও মহেনজোদারো সভ্যতার লিপিগুলির পাঠোদ্ধার এখনও সম্ভব হয়নি।খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতক থেকে ৩৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতে ব্রাহ্মীলিপি প্রচলিত ছিল। এরপর অশোক লিপি বা মৌর্য লিপিতে এর বিবর্তন শুরু হয়। এর পরের ধাপে আসে কুষাণ লিপি; এগুলি কুষাণ রাজাদের আমলে প্রচলিত ছিলপ্রাচীন নাগরী লিপির পূর্ব শাখা থেকে ১০ম শতকের শেষভাগে এসে উৎপত্তি হয়েছে বাংলা লিপির। কম্বোজের রাজা নয়পালদেবের ইর্দার দানপত্রে এবং প্রথম মহীপালের বাণগড়ের দানপত্রে সর্বপ্রথম আদি বাংলা বর্ণমালা দেখতে পাওয়া যায়।